Thursday, May 9, 2013

ইন্টারনেট ব্যবহারের সেরা ১০টি গুরুত্যপূর্ণ সমস্যা...


ইন্টারনেট আমাদের জীবনব্যবস্থায় এনে দিয়েছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। একটি পিসি ও ভালো গতির ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে শুধু বিনোদন নয়, ঘরে বসেই করা যাচ্ছে সম্মানজনক রুজি-রোজগারও। সঙ্গে একটি ক্রেডিট কার্ড থাকলে তো কেনাকাটাটাও ঘরে বসেই করে ফেলা যায়। এই যে এত সুযোগ-সুবিধা, দুনিয়াকে হাতের মুঠোয় এনে দেয়া, তারপরও কি অনলাইন দুনিয়ার সবকিছুই ভালো? মোটেও তা নয়। সত্যি বলতে কি, সুবিধার পাশাপাশি আমাদের জীবনে বিড়ম্বনাও কম বয়ে আনেনি ইন্টারনেট। দুনিয়াজুড়ে লাখ লাখ অনলাইন ব্যবহারকারীর মতামতের ওপর ভিত্তি করে ‘লাইভবার্স’-এর সাজানো অনলাইনের সেরা দশ সমস্যার কথা রয়েছে এই প্রতিবেদনে। আমাদের দেশে এখনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী খুবই কম, তবে তা দ্রুত বেড়ে চলছে। মূলত এই প্রতিবেদনটি সেসব নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বা যারা অচিরেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে যাচ্ছেন, তাদের সতর্ক রাখার প্রয়াস।

হ্যাকিং ও ডাটা সিকিউরিটি
আপনার ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও হ্যাকিং সম্পর্কে নিশ্চয় শুনেছেন। ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে যে কোনো হ্যাকার আপনার পিসি অরক্ষিত অবস্থায় থাকলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডাটা এমনকি ব্যাংকিং তথ্যও হ্যাক করতে পারে। হ্যাক হয়ে যেতে পারে আপনার সাধের ইমেইল আইডি বা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। তবে আপনি নিজে সতর্ক থাকলে হ্যাকারদের এড়াতে পারেন বলেই সম্ভবত এই সমস্যাটিকে ব্যবহারকারীরা রেখেছে দশ নম্বরে।

প্রাইভেসি
মূলত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে প্রাইভেসি রক্ষা করা খুবই কঠিন। আপনি হয়তো বন্ধুদের শেয়ার করার জন্য কোনো ছবি বা আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য আপলোড করলেন, কিন্তু তা খুব দ্রুতই আপনার অজান্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে লাখ লাখ ইউজারের কাছে। যদিও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে এ থেকে আপনি রেহাই পেতে পারেন, তবে সবচেয়ে ভালো সমাধান হলো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট যেমন ব্লগ, ফেসবুক, ফোরাম, এসবে আপনার ছবি বা ব্যক্তিগত তথ্য, মোবাইল নাম্বার শেয়ার না করাই উত্তম।

ভাইরাস
না, তালিকার প্রথম সারিতে ভাইরাস বা ওয়ার্ম নেই। যদিও ভাইরাসের প্রজননস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে ইন্টারনেট। তবে বিশ্বস্ত সাইটগুলো ভিজিট করলে অনাকাঙ্ক্ষিত মেইল ওপেন না করলে ভালো অ্যান্টি ভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করলে এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব।

যৌন হয়রানি
এ ব্যাপারটিও ঘটে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ও চ্যাট রুমগুলোতে। খুব ভদ্রভাবে আপনার সঙ্গে মিশবে, তারপর আপনার কিছু ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি হাতাবে, তারপর ওগুলো প্রচার করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করা হবে। আমাদের দেশীয় অসংখ্য সাইট আছে যেগুলোতে প্রতিনিয়ত এ ধরনের প্রতারণা এবং ভুক্তভোগীদের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী তা প্রথম প্রথম জানতেও পারছেন না।

অনলাইনে আসক্তি
ব্যাপারটা আর শুধু টিনএজদের মধ্যেই থেমে থাকেনি। বয়স্কদের মধ্যেও এ সমস্যাটি ছড়িয়ে পড়ছে। ব্যস্ত অফিসের বড়কর্তা বা ব্যবসায়ীরাও চ্যাটিং, ব্লগিং বা অনলাইনে গেমস খেলে নষ্ট করছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময়। নতুন ইউজারদের যতটা সম্ভব সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ মূলত এই সাইটগুলোই অনলাইনে আসক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।

প্রতারণা
দিন দিন অনলাইন প্রতারকদের অভয়ারণ্যে পরিণত হচ্ছে। নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বনে প্রতারকরা জালিয়াতি করে যাচ্ছে। আপনি হয়তো অফিসের কোনো কাজে বা নিতান্ত শখের বশে একটি ইমেইল আইডি খুললেন। কিছুদিন পর দেখলেন আপনার কাছে মেইল এলো একটি অনলাইন ভিত্তিক লটারি সংস্থার। তারা জানাল, আপনি তাদের অনলাইন সিলেকশনে ১ লাখ ডলারের লটারি জিতেছেন, এখন এগুলোর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য ১০০০ ডলার তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠাতে হবে। অথবা সুদূর সিয়েরা লিওন থেকে কোনো তরুণী মেইল করল, তার বাবা ওই দেশের একজন মস্ত বড়লোক ছিল তাকে খুন করা হয়েছে। তার কোনো আত্মীয় ওই দেশে নেই। আপনাকে তার খুব ভালো লেগেছে তাই সে তার লাখ লাখ ডলার ব্যাংক থেকে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠাতে চাচ্ছে এবং সে আপনার কাছে চলে আসতে চাচ্ছে। এ জন্য তার হাজার দুয়েক ডলার প্রয়োজন। আপনি যদি এদের বিশ্বাস করেন তবেই ফেঁসেছেন।

এমনভাবে তারা মেইল চালাচালি করবে যে পুরো ব্যাপারটিই আপনার কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে। এমনি নানা উপায়ে অনলাইনে প্রতারকরা প্রতারণার জন্য ওত পেতে বসে আছে। তাদের কাছ থেকে বাঁচতে আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি এমন কোনো ভাগ্যবান না যে লটারি বা অন্য কোনো উপায়ে রাতারাতি লাখ লাখ ডলার পেয়ে যাবেন। তাই এ জাতীয় মেইল এলে কোনো দ্বিধা ছাড়াই এড়িয়ে যাবেন।

ভুল তথ্য/প্রোপাগাণ্ডা
অনলাইনের সবচেয়ে বিরক্তিকর একটি দিক এটি। আপনি কোনো সফটওয়্যার বা ফাইল নামাতে চাচ্ছেন ফ্রিতে। সার্চ দিয়ে ফ্রি সাইট বের করলেনও। তারপর দেখবেন রেজিস্ট্রেশন চাচ্ছে। এরপর নানা বিরক্তিকর ধাপ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ড চাইবে। অসংখ্য এমন সাইট আছে অনলাইনে। আবার কিছু সাইট আছে, ফাইল নামানোর পর দেখবেন তা নষ্ট। আবার প্রতিপক্ষ বা শত্রু শ্রেণীর কাউকে ঝামেলায় ফেলার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল প্রচারণা চালাতে ইন্টারনেট এক ধরনের লোকের প্রথম পছন্দ। এখানে যে কেউ লিখতে পারে, তার কথা শেয়ার করতে পারে এবং তা অন্যায় উদ্দেশ্যে প্রায়ই ব্যবহৃতও হচ্ছে। একবার বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার টমি হিলফিজার সম্পর্কে বলা হলো-তিনি উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রে সম্পর্কে বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন। চেইন মেইলে লাখ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর কাছে এ তথ্য পাঠানো হলো এবং বলা হলো তার তৈরি পোশাক বর্জন করার জন্য। অনেক দিন পর জানা গেল, ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভুয়া কিন্তু তত দিনে টমির ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি পুরো শেষ।

কালোবাজার
যদিও আমাদের মতো দরিদ্র দেশে কপিরাইট আইন পুরোপুরিভাবে কার্যকর হওয়ার পক্ষে আমি নিজেও নই, তবু কিছু কথা থেকে যায়। নতুন একটি অডিও অ্যালবাম বের হলো বা সিনেমা বের হলো, এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে। ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ভালো দিক, কারণ বিনা মূল্যে সে ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারছে। কিন্তু শিল্পী বা পরিচালকের জন্য চরম কষ্টকর এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কারণ। প্রতি বছর দুনিয়াজুড়ে অনলাইনের কারণে মিডিয়াগুলো হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার বাজার। এছাড়া অনলাইনে ইদানীং বন্যপ্রাণী পাচার এমনকি মাদকদ্রব্য পাচারও হয়ে থাকে।

হয়রানি
সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর এটি আরেক সমস্যা। ছদ্মনামে থাকায় আপনি আপনার বন্ধুদের শনাক্ত করতে পারবেন না বেশির ভাগ সময়ই। তাদের সঙ্গে মেশার পর আপনার নানা তথ্য নিয়ে আপনাকে নানাভাবে হয়রানি করা হতে পারে।

শিশু পর্নোগ্রাফি
ভয়াবহ একটা ব্যাপার ধীরে ধীরে বেড়ে চলছে ইন্টারনেটের কারণে। সামপ্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, অনলাইনের পর্নোগ্রাফির ২০ ভাগই চাইল্ড পর্নো। বিলিয়ন ডলারের এক শিল্পে পরিণত হওয়ায় এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াটাও বেশ কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। এমনকি অ্যাডাল্ট সাইটগুলোতে ৫ বছরের শিশুরও নগ্ন ছবি ভিডিও আপলোড করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এর ফলে একটি প্রজন্মকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে অন্ধকার ভবিষ্যতের দিকে।

অনুরোধ রইলো সবার কাছে 
আমাদের http://www.facebook.com/ClickHelp24 একবার পরিদর্শন করে আসুন ।
Filed Under :

0 comments for "ইন্টারনেট ব্যবহারের সেরা ১০টি গুরুত্যপূর্ণ সমস্যা..."

background